মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আট ইউনিয়নের মধ্যে রাজস্ব খাতের টাকার অসম বণ্টনের কারণে ইউপি চেয়ারম্যানদের আপত্তির মুখে আটকে আছে উন্নয়ন কাজ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টেন্ডার ও কাজ না হলে টাকাগুলো সরকারি কোষাগারে যেমন ফেরত যাবে তেমনি উন্নয়ন বঞ্চিত হবে রাজনগরের সাধারণ মানুষ। এনিয়ে বিগত উপজেলা সমন্বয় সভায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান। মৌলভীবাজার-রাজনগর আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদও এ ব্যাপারে সমহারে বণ্টনের নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার আট ইউনিয়নে উন্নয়নের জন্য চলতি অর্থবছরে এডিবি’র ৫৭ লাখ ৯৯ হাজার ও রাজস্ব খাতের ৩ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। বিগত অর্থ বছরগুলোতে জানুয়ারি মাসে টেন্ডার করেই কাজগুলো আদায় করা হতো। কিন্তু চলতি অর্থবছরে মার্চ মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও এখনো টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজস্ব খাতের উন্নয়নের জন্য অর্থবছরের মাঝামাঝিতে উপজেলার আট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের ১০ লাখ টাকা করে প্রকল্প তালিকা দেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা উল্লেখ ছিল। কিন্তু চেয়ারম্যানরা প্রকল্প দেয়ার পর পরবর্তী সমন্বয় সভায় এসে দেখেন টাকার অঙ্ক হয়ে গেছে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
এ সময় মনসুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত আপত্তি জানান এবং রেজ্যুলেশনে উল্লেখ রাখার জন্যও বলেন। এ সভায় আর তেমন কিছু না হলেও পরবর্তী সভায় আবারো দেখা যায় বরাদ্দ বেড়ে হয়ে গেছে ৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সমন্বয় সভায় বিষয়গুলো উত্থাপন না করে প্রকল্পগুলো পাস করায় চেয়ারম্যানরা আপত্তি জানান। এ ছাড়াও কোনো ইউনিয়নে ২১ লাখ আবারো কোনো ইউনিয়নে ৫৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে গত ২৮শে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় নেছার আহমদ এমপি’র উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানরা তাদের আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরেন। এ ছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত তার আপত্তির বিষয়টি রেজ্যুলেশনে না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সমন্বয় সভার উপদেষ্টা নেছার আহমদ এমপি সমহারে এডিবি ও রাজস্ব খাতের বরাদ্দ বণ্টনের নির্দেশ দিয়ে প্রকল্পগুলো স্থগিত রাখার জন্য পরামর্শ দেন।
পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা বলেন, আমাদের ১০ লাখ টাকার প্রকল্প দেয়ার জন্য বলা হয়। এ সময় বরাদ্দ দেখানো হয় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কিন্তু এ টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ কোটি ৭৬ লাখ। আমরা জানিই না। অসম বণ্টন ও আমাদের অজ্ঞাতে প্রকল্প নেওয়ায় করায় আমরা সকল চেয়ারম্যান আপত্তি জানিয়েছি এবং সমহারে বণ্টন করার দাবি জানিয়েছি।
ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত বলেন, গত সভায় এ বিষয়ে আমরা সকল চেয়ারম্যান আপত্তি জানিয়েছি। সভায় উপস্থিত এমপি মহোদয়ও এ বিষয়ে সমহারে বণ্টনের নির্দেশ দিয়ে প্রকল্পগুলো স্থগিত রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, আমি রাজনগর আসার আগে অক্টোবর মাসে প্রকল্পগুলো পাস করা হয়েছে। চেয়ারম্যানরা আপত্তি জানিয়েছেন। উন্নয়ন কাজের সদস্য সচিব উপজেলা প্রকৌশলী বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রকৌশলীর মোবাইল ফোনে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।