মৌলভীবাজারের রাজনগরে অপহৃত এক কিশোরীকে (১৪) উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণের ৫ দিন পর তাকে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থেকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণের শিকার কিশোরী উপজেলার আরমান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে পুলিশ আটক করেছে রাজনগর থানার পুলিশ। বুধবার (২৬ এপ্রিল) আসামীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রাজনগর উপজেলার শ্রীভোগ গ্রামের আজিজুল হকের নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে আশা (ছদ্মনাম) গত ২০ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে ঈদের কেনাকাটা করতে রাজনগর বাজারে যাওয়ার পর আর বাড়ীতে ফিরে আসে নি। তাকে খুঁজাখুঁজি করে না পেয়ে মেয়েটির বাবা রাজনগর থানায় ২১ এপ্রিল সাধারন ডায়রী (নং- ৯৫৩) করেন। পরে ২৪ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একটি ইমু নম্বর থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি কিশোরীর বাবার ইমু নম্বরে কল করে জানায় আশাকে (ছদ্মনাম) অপহরণ করেছে ও সে তাদের কাছে রয়েছে। বিষয়টি জেনে কিশোরীর বাবা থানায় ২৫ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সওকত মাসুদ ভূঁইয়াকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। সীম কার্ডের নিবন্ধন তথ্য সংগ্রহ করে হবিগঞ্জ সদর থানার অমর চন্দ্র দাসের ছেলে অন্তু চন্দ্র দাসকে(২৬) স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় হবিগঞ্জ জেলার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্ত্বর থেকে ২৬ এপ্রিল রাত দেড়টার দিকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে জানায়, ব্যবহৃত নম্বরটি তার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধন করা হলেও নম্বরটি তার ঘনিষ্ট মনির মিয়া (১৫) ব্যবহার করছে। কিশোর মনির মিয়ার ভোটার কার্ড না থাকায় সে মনির মিয়াকে এই নম্বরটি নিবন্ধন করে কিনে দিয়েছে। এসময় সে ও মনির মিলে মেয়েটিকে অপহরণ করেছে বলে স্বীকার করে বলে জানায় পুলিশ। মনির ওই কিশোরীকে নিয়ে ব্রাহ্মনবাড়ীয়া জেলার নাসিরনগর থানার গুচ্ছগ্রামের সরকারী আশ্রয়ন কেন্দ্রে অবস্থান করছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই রাত সোয়া ৪টায় আশ্রয়ন কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সেখান থেকে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে মনির মিয়াকে(১৫) আটক করা হয়। বুধবার তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আসামীরা মেয়েটিকে অপহরণ করার পর মোবাইল ফোনের ইমুতে কল করে জানায়। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে থানার অফিসাররা তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করেন। পরে হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের সহযোগিতায় মেয়েটিকে উদ্ধার ও দুইজনকে আটক করা হয়েছে। অপহরণকারী একজন কিশোর রয়েছে।