বিয়ের যোগারযন্ত শেষ। দূরদূরান্তের আত্মীয়-স্বজনরাও এসেছেন বিয়ে উপলক্ষে। শনিবার রাতে গায়ে হলুদ হওয়ার কথা ছিল। বর সেজে রোববার দুপুরে বউ আনতে যাওয়ার কথা আব্দুর রহিমের (২৮)। কিন্তু ভাগ্যের নির্মমতায় শনিবার (১০ জুন) দুপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন এই যুবক। যে বাড়িতে উৎসব হওয়ার কথা তার মৃত্যুর খবরে সে বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম।
নিহত আব্দুর রহিম উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘড়গাঁও গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালক ছিলেন ।
নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের নয়াটিলা গ্রামের মৃত রইছ আলীর মেয়ে ঝর্ণা আক্তারের (১৮) সাথে আব্দুর রহিমের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করেন পরিবারের সদস্যরা। রবিবার তাদের বিয়ে হওয়ার কথা। গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের জন্য আলোকসজ্জার বাতি টানানো হয়। শনিবার দুপুর ২টার দিকে বৃষ্টিতে ভিজে খালি পায়ে আলোকসজ্জার একটুকরো তার ঝুলতে দেখে সরাতে যান রহিম। এক পর্যায়ে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। রহিমের খালাতো ভাই দিপু মিয়া তাকে তুলতে গেলে তিনিও বিদ্যুতের ঝটকায় পড়ে যান। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডেিকল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, উৎসবের আমেজে থাকা বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আত্মীয়-স্বজনরা বিলাপ করছেন। বিয়ের জন্য সাজানো আলোকসজ্জার বাতি ও গেইট খুলছেন ডেকরেটার্স কর্মীরা।
নিহতের খালাতো ভাই দিপু মিয়া বলেন, রহিম ভাইকে পড়ে যেতে দেখে আমি এগিয়ে যাই। স্পর্শ করতেই আমিও ঝটকায় নিচে পড়ে যাই। পরে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে স্বজনরা জানিয়েছেন তিনি মারা গেছেন।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, একজন বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। পরিবারের কেউ এখনো অভিযোগ করেন নি।