মৌলভীবাজারের রাজনগরে অষ্টম শ্রেণি পাশের জাল ছাড়পত্র দিয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে চাকুরী করছেন একজন। এক বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হয়েও ৮ম শ্রেণি পাশ করেছেন দেখিয়ে অন্য বিদ্যালয়ের নামে তৈরি করেছেন ছাড়পত্র। উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের উমরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরী তামিম আহমদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উমরপুর গ্রামের আবুল হোসেন নামের এক ব্যাক্তি।
তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সেই জাল ছাড়পত্রের সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০১২ সালে ফখরুল ইসলাম তামিম নামে রাজনগর উপজেলার কান্দিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে জেএসসি পরীক্ষায় (রোল ৫৫৩৫২৫, বোর্ড- সিলেট) অংশ নেন। সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি রেজিস্টারে তার পিতার নাম মো. জমির উদ্দিন, মায়ের নাম পিয়ারা বেগম, জন্মতারিখ ০৬ জানুয়ারি ১৯৯৬ সাল, গ্রামের নাম উমরপুর লেখা রয়েছে। সে ওই বিদ্যালয়ে ২০০৮ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। ২০১২ সালের জেএসসি পরীক্ষায় তিনি ইংরেজী বিষয়ে অকৃতকার্য হলেও পরে আর পরীক্ষায় বসেন নি বলে জানিয়েছে কান্দিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।
একই ব্যাক্তি আংশিক নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালে ৮ম শ্রেণি পাশ করেছে দেখিয়ে রাজনগর উপজেলার সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে জাল ছাড়পত্র তৈরি করে ২০১৪ সালে উপজেলার উমরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে চাকুরী নিয়েছেন। ওই ছাড়পত্রে তার নাম তামিম আহমদ, পিতার নাম মো. জমির উদ্দিন, মাতার নাম পিয়ারা বেগম, জন্ম তারিখ ০৬ জানুয়ারি ১৯৯৫ সাল ও গ্রামের নাম উমরপুর লেখা রয়েছে। তবে সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছেন এই ছাড়পত্র তাদের বিদ্যালয়ের নয় এবং সে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও ছিল না।
সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক কাঞ্চন কুমার দাস বলেন, এই ছাড়পত্রে যে স্বাক্ষর রয়েছে সেটি আমার নয়। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের সীল নেই এই ছাড়পত্রে।
অভিযুক্ত তামিম আহমদ বলেন, এই ছাড়পত্র মূলত আমাকে উমরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ময়জুল হক ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। পরে এই ছাড়পত্রে আমার চাকরী হয়ে যায়।
সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইমাম উদ্দিন বলেন, এই শিক্ষার্থীর কোনো তথ্য আমাদের বিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিস্টারে নেই। ছাড়পত্রটিতে যে স্বাক্ষর রয়েছে সেটি আমার জানামতে আগের প্রধান শিক্ষকের নয়।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী নাদিমুল হক বলেন, তামিমের বিরুদ্ধে এমন একটি অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। আমার সাথে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আরতি ব্যানার্জিও তদন্ত করবেন। তদন্ত করে শিগগিড়ই প্রতিবেদন জমা দেবো।