স্বামী ওম প্রকাশ জিন্দালের মৃত্যুর পর সাবিত্রী জিন্দাল ব্যবসার দায়িত্ব হাতে নেন। আর পাঁচটা মানুষ যে বয়সে অবসরের পরিকল্পনা করেন, সেই বয়সে এসে তিনি ব্যবসার মারপ্যাঁচ শিখতে শুরু করেন। আর আজ তিনিই ভারতের সবচেয়ে ধনী নারী।
ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলেছে, সাবিত্রী জিন্দাল কখনও কলেজে যাননি। স্বামীর মৃত্যুর পর ব্যবসার দায়িত্ব নেন তিনি। আর তারপর গত ২ বছরেই তার মোট সম্পদ প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। হিসাব বলছে, গত ২ বছরে তার মোট সম্পদ ৩ গুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০২০ সালের ৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২২ সালে তা ১৭.৭ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
এই সাবিত্রী জিন্দালই কোনও এক সময়ে বলেছিলেন, ‘জিন্দাল পরিবারের নারীরা বাড়ির দায়িত্বে থাকেন। অন্যদিকে পুরুষরা বাইরের সবকিছুর যত্ন নেন।’
ফোর্বসের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত কয়েক বছর ধরেই তিনি ভারতের সবচেয়ে ধনী নারী। ভারতের সবচেয়ে ধনী নারীর তালিকায় তার পরই আছেন বায়োকনের প্রতিষ্ঠাতা কিরণ মজুমদার।
২০২০ সালের বিশ্ব বিলিয়নিয়ার তালিকায় ৩৪৯ নম্বরে ছিলেন সাবিত্রী জিন্দাল। সেখান থেকে ২০২২ সালে ১২৬ নম্বরে উঠে এসেছেন তিনি।
২০০৫ সাল। সাবিত্রী জিন্দালের তখন ৫৫ বছর বয়স। তার স্বামী জিন্দাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ওম প্রকাশ জিন্দাল হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। জিন্দাল গ্রুপ ভারতের ইস্পাত ও বিদ্যুৎ খাতের অন্যতম বড় সংস্থা। ওপি জিন্দাল হরিয়ানা সরকারের মন্ত্রী এবং হিসার নির্বাচনী এলাকা থেকে হরিয়ানা বিধানসভার সদস্য ছিলেন।
এরপর থেকে সাবিত্রী বিশাল ব্যবসার দায়িত্ব হাতে নেন। স্বামীর অপূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করবেন বলে পণ করেন তিনি। আর পাঁচটা মানুষ যে বয়সে অবসরের পরিকল্পনা করেন, সেই বয়সে এসে তিনি ব্যবসার মারপ্যাঁচ শিখতে শুরু করেন। সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে-মেয়ে, অনুগত কর্মীরাও।
অল্প সময়ে শিখেও ফেলেন। তার ক্ষুরধার বুদ্ধির জেরে বহুগুণ বৃদ্ধি পায় জিন্দাল গ্রুপের ব্যবসা। আর আজ ভারতের সবচেয়ে ধনী নারী।
এর পাশাপাশি সক্রিয় রাজনীতিতেও যোগ দেন তিনি। ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন সাবিত্রী। আসামের তিনসুকিয়া শহরে বড় হন। ১৯৭০ সালে ওপি জিন্দালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ৯ সন্তান রয়েছে।