মৌলভীবাজারের রাজনগরে এক নববধূর মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ওই গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় মামলাটি করেন।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের পঞ্চানন্দপুর গ্রামের আনকার মিয়ার মেয়ে আয়েশার ৩-৪ মাস আগে একই ইউনিয়নের হাটিকরাইয়া গ্রামের হবিব উল্লাহর ছেলে সিএনজি অটোরিক্সা চালক মো. শীষ আলীর (২৫) সাথে বিয়ে হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করে আয়শাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে এবং তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বের হতে আয়শার বড় বোনকে নিহতের স্বামী মোবাইল ফোনে জানান। সকাল সাড়ে ৮টার সময় আয়শার বোনসহ তার স্বামী রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রথমে নিহতের স্বামীকে থানা পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়। পরে নিহতের বাবা আনকার মিয়া বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে জামাতা শীষ আলীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলা করেন। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
নিহতের বড় বোন সোনিয়া বেগম বলেন, তাদের (স্বামী-স্ত্রী) মধ্যে কোনো ঝগড়া-ঝামেলার কথা আগে কখনো শুনি নি। সকালে আয়শাকে হাসপাতালে নিতে হবে বলেই আয়শার স্বামী ফোন কেটে দেয়। দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে করাইয়া বাজারে গেলে সেখান থেকে আমি তাদের সাথে হাসপাতালে যাই। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান সে মারা গেছে। পরে তার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে জানায়- ‘ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আয়শা বেগমের শ্বাশুড়ি তাকে ঘুম থেকে উঠতে ডাকেন। তিনি ঘুম থেকে না উঠায় স্বামী তাকে ঘুম থেকে তোলেন। এতে আয়শা রাগান্বিত হয়ে উঠেন। স্ত্রীকে শান্ত করতে তিনি সেখান সড়ে গিয়ে গোসল করতে চলে যান। এসময় শ্বাশুড়ি রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। গোসল শেষে স্বামী ঘরে ঢুকেই আয়েশাকে টিনের ঘরের তীরের সাথে ওড়না প্যাচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখেন।’ তার কথা রহস্যজনক।
রাজনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সূলেমান আহমদ বলেন, আমরা রাজনগর হাসপাতালে গিয়ে মৃতদেহ পেয়েছি। সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এ ব্যপারে স্পষ্ট হওয়া যাবে। নিহতের বাবা বাদী হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেছেন। নিহতের স্বামী শীষ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নববধূর মৃত্যুর ঘটনায় রাজকথা সহ কয়েকটি অনলাইন ও দৈনিক পত্রিকায় শুক্রবার ও শনিবার সংবাদ প্রকাশিত হয়।