মানসিক ভারসাম্যহীন রুহুল মিয়া (৪০) ঘুরে বেড়াতেন ভবঘুরের মতো। কখনো রাস্তার পাশে আবার কখনো থানার সামনের বাগানে বসে একা একা কথা বলতে দেখা যেত তাকে। কেউ দয়া করে খাবার দিলে ক্ষুধা মেটাতেন তিনি। প্রচণ্ড শীতে দোকানের বারান্দায় শুয়ে থাকতে দেখে তার সাথে কথা বলেন রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায়। কথা বলে বুঝতে পারেন তার বাড়িঘর সব রয়েছে। তবুও পারিবারিক অবহেলায় রুহুল মিয়া পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিবারে ঠাঁই হয়েছে তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের মুশুরিয়া গ্রামের রুহুল মিয়ার মা মারা গেলে বাবা আরব আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকেই তার প্রতি সৎ মায়ের অবহেলা বাড়তে থাকে। সৎ মায়ের পরামর্শে একসময় বাবা বাড়ি থেকে বের করে দেন তাকে। সেই থেকে তার ঠাঁই হয় বিভিন্ন দোকানের বারান্দা ও কলেজ পয়েন্ট যাত্রী ছাউনী। অবহেলার শিকার হয়ে ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। বিভন্ন সময় রাজনগর থানার বাগানে বসে একা একা কথা বলতেন। ভবঘুরে ভেবে কেউ তাকে বাঁধা দিতো না। প্রচণ্ড শীতে থানার সামনের একটি দোকানের বারান্দায় শুয়ে থাকতে দেখে রাজনগর থানার ওসি তার সাথে কথা বলেন। এসময় সে তার বাড়ির ঠিকানা জানালে ওসি বিনয় ভূষণ রায় বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য উপপরিদর্শক (এসআই) নুর উদ্দিনকে নির্দেশ দেন।
পরে এসআই নুর উদ্দিন এলাকায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারেন, তার পরিবারের লোকজন পারিবারিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে কৌশলে তাকে পাগল সাজিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরবিাররে লোকজনরে সাথে আলাপ করে রাজনগর থানার ওসি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের হস্তক্ষেপে এসআই নুর উদ্দিন তার বাড়িতে গিয়ে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রুহুল মিয়াকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করবেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়।
এব্যাপারে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, পারিবারিক অবহেলায় রুহুল মিয়া মানসিক ভারসাম্যহীনের মতো জীবনযাপন শুরু করেন। শীতের রাতে তাকে দোকানের বারান্দায় দেখে কৌতুহলী হয়ে কথা বলে জানতে পারি তার বাড়িঘর সব রয়েছে। পরে আমার অফিসার গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পারবারিক সম্পত্তির লোভে তাকে পাগল সাজিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে বাড়িতে দিয়ে আসা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করানো হবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।