Logo

কুলাউড়ায় একটি মাদ্রাসায় অফিস সহকারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : / ১৪৯
প্রকাশিত : সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

কুলাউড়া উপজেলার গিয়াসনগর দাখিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই পদে আবেদনকারী জনি বেগম।

 

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন।

 

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার জয়চন্ডি ইউনিয়নের গিয়াসনগর ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার। দুপুর ২ টার পরীক্ষা শুরু হয় বিকাল ৪ টায়। নিয়োগ কমিটিতে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ডিজি অফিসের প্রতিনিধি, কুলাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, মাদ্রসা সুপার এবং শিক্ষানুরাগী সদস্য। কিন্তু পরীক্ষা গ্রহণ করেন শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আনোয়ার, মাদ্রাসার সুপার তৈয়ীবুর রহমান এবং মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল খায়ের। তাঁরা ডিজি প্রতিনিধির সময় স্বল্পতা দেখিয়ে তড়িগড়ি করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেন। নির্ধারিত সময়টুকু পরীক্ষার্থীদের না দিয়ে অশ্লিল ভাষা ব্যবহার করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে উত্তরপত্র টেনে নিয়ে যান। কিন্তু যে পদের জন্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, সেই কম্পিউটারের উপর ব্যবহারিক পরীক্ষাটাই নেয়া হয়নি।

 

তাৎক্ষনিক নিয়োগ বোর্ডের প্রধান নিজের নানা সমস্যা দেখিয়ে পরের দিন বোর্ড থেকে রেজাল্ট জানানো হবে বলে দ্রুত চলে যান। মাদ্রাসা সুপার ও শিক্ষা কর্মকর্তাও আড়াল হয়ে যান। এরইমধ্যে ৪ জন পরীক্ষার্থীর ২ জন চলে যান। নিয়োগ কর্তাদের চালচলনে সন্দেহ হলে পরীক্ষার্থী জনি বেগমসহ এলাকার বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি মাদ্রাসার পাশে অবস্থান করেন। ঘন্টা খানেক পর মাগরিবের আজানের সময় আবারো মাদ্রাসায় ফিরে আসেন ডিজি প্রতিনিধি, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদ্রাসা সুপার। এসেই ঘোষণা করেন আবু বক্কর নামের পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। যা শুনে তারা সকলেই অবাক হন।

 

এবিষয়ে পরীক্ষার্থী জনি বেগম বলেন, আমি যখন আবেদনপত্র দিতে যাই তখন মাদ্রাসা সুপার আমাকে বলেন, এখানে কোন মহিলা নিয়োগ দেয়া হবে না। তুমি আবেদন করে কি করবা? মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সুপার আমাকে আর্থিক অফার করেছেন, কিন্তু আমি দিতে রাজি হইনি। আর এ কারনেই তাদের একান্ত ইশারা ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তাঁদের পছন্দসই প্রার্থীকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়। কম্পিউটারের উপর আমার একাধিক সরকারী সার্টিফিকেট রয়েছে। কিন্তু আমি যতটুকু জানি, যাকে নির্বাচিত করা হয়েছে তিনি কম্পিউটার সম্পর্কে কিছুই জানেন না। আর এই কারণেই পরিকল্পিতভাবে ব্যবহারিক কম্পিউটার পরীক্ষাটা নেয়া হয়নি। ব্যবহারিক পরীক্ষাটা নেয়া হলে আমি অবশ্যই উত্তীর্ণ হতাম। পরীক্ষা শেষে তারা আমার রেজাল্ট শিট ও ইন্টারভিউ কার্ডটিও দেননি। বিষয়টি তদন্ত করলে সকল সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

 

মাদ্রাসার সুপার মাওলানা তৈয়ীবুর রহমান আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সম্পূর্ন নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে ডিজি অফিসের প্রতিনিধি আসতে দেরি হওয়ায় পরীক্ষায় একটু দেরি হয়েছে।

 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আনোয়ার জানান, আমরা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দিয়েছি। কোন অনিয়ম হলে আপনারা তদন্ত করে দেখতে পারেন।

 

এব্যাপার কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও পড়ুন
Theme Created By ThemesDealer.Com
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।