মৌলভীবাজারের রাজনগরে বসতঘর থেকে ফেরদৌস হাসান তুহিন (২১) নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার এই মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের বাবার বাড়ির লোকজন এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বললেও মায়ের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সুবিদপুর টেকারবন্দ এলকার মোল্লাবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন ওই গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সুবিদপুর টেকারবন্দ এলাকার ইউসুফ আলীর সাথে তার স্ত্রীর পারিবারিক কলহ থাকায় তিনি কয়েক বছর আগে তার বাবার বাড়ি রাজনগরের খারপাড়ায় চলে যান। প্রবাসী ইউসুফ গত জানুয়ারি মাসে দেশে আসলে ছেলে তুহিন তার বাবা-মায়ের মধ্যে বিরোধ মেটাতে চেষ্টা করেন। এ নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। বুধবার সন্ধ্যায় তাদের বসতঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহের গলায় দড়িবাঁধা ও শোয়ানো মৃতদেহ এবং দড়ির বাকী অংশ ঘরের ফ্যানের সাথে আটকানো রয়েছে দেখতে পেয়েছেন। পরে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে জেনেছেন, আশেপাশের লোকজন ঝুলন্ত মৃতদেহ দড়ি কেটে নিচে নামিয়েছেন।
এদিকে নিহতের মায়ের দাবি, তুহিনের বাবা দেশ থেকে আসার পর তার মাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করার চেষ্টা করছিলেন। বিষয়টিতে একমাত্র তুহিনই বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছিল। সে তার মাকে ফেরাতে বারবার চেষ্টা করছিল। এ নেিয় বাবা-ছেলের মধ্যে একাধিকবার ঝগড়া হয়। বুধবার তার মৃত্যুর খবর পরিবারের লোকজন তাদেরকে জানায়নি। তারা পাশের বাড়ির একজনের কাছ থেকে জেনে সেখানে গিয়ে দেখেন তার মৃতদেহ বিছানায় রাখা রয়েছে। মায়ের পক্ষ নিয়ে বাবার দ্বিতীয় বিয়েতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোয় তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে নিহতের মা দাবি করেছেন।
নিহতের মা মিনারা বেগম বলেন, তুহিনের বাবা বিদেশ থেকে আসার পর আমাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করতে মরিয়া হয়ে উঠেন। কিন্তু তুহিন এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। এই বাঁধার কারণে তাকে হত্যা করে বাঁধা সরানো হয়েছে। আমরা মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।
নিহতের বাবা ইউসুফ আলী বলেন, আমি মৌলভীবাজার থেকে ফিরে শুনি ছেলে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার মন এখন ভালো না। আশেপাশের দশজনকে জিজ্ঞাস করে দেখেন।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।