Logo
সর্বশেষ :
রাজনগরে ব্যবসায়ীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাজনগরে বিএনপি’র বিজয় মিছিল প্রেস রিলিজ : অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন নেছার আহমদ সানি মৌলভীবাজারে কৃষকদলের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল রাজনগরে জনসংখ্যা দিবস উদযাপন রাজনগরে মিষ্টির কারখানায় ঢুকতে না দেয়ায় যুবদল নেতার হামলা, আহত ২ ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড মিসবাহ ভেবে হত্যা করা হয় ‘আইনজীবী সুজনকে’ রাজনগরে ছাত্রদলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল রাজনগরে দারুল ক্বিরাত এবং বয়স্কদের সহীহ্ কুরআন প্রশিক্ষণের সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরন মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ কর্মচারীদের মধ্যে শিবিরের ঈদ সামগ্রী বিতরণ

চার মাসের শিশু শাফি জানে না মা বেঁচে নেই

মো. ফরহাদ হোসেন / ১৭৬২
প্রকাশিত : সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩

কখনও দাদী, কখনও পাশের বাড়ির চাচী আবার কখনও অন্য স্বজনের কোলে ঠাঁই হচ্ছে চার মাসের শিশু শাফি আহমদের। তবে কারও কোলে গিয়েই অবুঝ শিশুটির কান্না থামছে না। হয়তো তার অবুঝ দুটি চোখ খুঁজে ফিরছে স্নেহময়ী মায়ের মুখ। কিন্তু পাচ্ছে না কোথাও। পাবেও না আর কোনোদিন।

 

 

তার মা যে আগুনে জ্বলসে মরে গেছে এ কথাও কেউ তাকে বুঝাতে পারবে না এখন। অবুঝ শিশু শাফি আহমদের মা নূপুর বেগম (১৯) সোমবার সকালে শিশুটির জন্য সুজি রান্না করতে গেলে আগুনে জ্বলসে মারা গেছে বলে নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানিয়েছে। তবে নিহতের মায়ের দাবি, বিভিন্ন সময় তাকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের নয়াটিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

 

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে জুতার ফ্যাক্টরীতে কাজ করার সময় নয়াটিলা গ্রামের আহাদ মিয়ার ছেলে জায়েদ মিয়ার সাথে পরিচয় থেকে প্রেম ও পরে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিয়ে হয় পাবনার ইশ্বরদী থানার নওদা বাড়ী এলাকার রাশেদা বেগমের মেয়ে নূপুর বেগমের। বিয়ের কিছুদিন পর গাজীপুর থেকে স্বামীসহ তিনি শ্বশুর বাড়িতে চলে আসেন। স্বামী এখানে বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সোমবার (০৬ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে বাচ্চার জন্য নূপুর চুলায় সুজি রান্না করছিলেন। তার স্বামী রান্নাঘরে গিয়ে দেখতে পান তিনি জ্ঞান হারিয়ে চুলার উপর পরে আছেন। স্বামীর চিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা এসে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে তাকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নূপুরকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

 

এদিকে নিহতের মা রাশেদা বেগমের দাবি, রোববার বিকেলে মেয়ে ফোনে তাকে বলেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেয়েকে ঠিকমতো খাবার দিচ্ছে না। তার শ্বাশুরি আশেপাশের মহিলাদের সাথে বলেছেন তাকে শিগগিরই ডিভোর্স দেয়া হবে। তাই তাকে এসে নিয়ে যাওয়ার জন্য নূপুর মায়ের কাছে বায়না ধরে। শুক্রবার এসে নিয়ে যাবেন বলে রাশেদা বেগম মেয়েকে জানান।
এদিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মা হারা চার মাসের শিশু শাফিকে কান্না থামাতে কোলে নিয়ে ঘুরছেন দাদী রাশেদা বেগম। কিছুতেই তার কান্না থামছে না। আশেপাশের বাড়ি থেকে মহিলারা আসছেন শিশুটিকে স্নেহ দিতে। কেউ কেউ বুকের দুধ পান করিয়ে ও গুড়োদুধ দিয়ে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন।

 

শিশুটির দাদী আনছারুন বেগম বলেন, সকালে ছেলের চিৎকার শুনে বাইরে থেকে ঘরে গিয়ে দেখি নূপুরের চোখ ও হাতের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। তার জ্ঞান ছিলো না। আমার ছেলেরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে খবর পাই সে মারা গেছে। সে খুব শান্তশিষ্ট ছিল। পরিবারের সবাই তাকে পছন্দ করতো।

 

রাজনগর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তদন্ত করে জেনেছি তাদের পারিবারিক কোনো ঝামেলা ছিল না। সবার সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। সুরতহালেও হাত ও চোখ জ্বলসে যাওয়া ছাড়া আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না। সে হাইপ্রেসারের রোগী ছিল। ছেলের জন্য সুজি রান্না করার সময় চুলার আগুনে জ্বলসে যায় বলে জেনেছি।


আরও পড়ুন
Theme Created By ThemesDealer.Com
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।