Logo

কুরআনের হাফেজ হওয়া হলো না রাজনগরের আল আমিনের

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : / ৮২৮
প্রকাশিত : শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩

অনেক আশা নিয়ে পবিত্র কুরআন হিফজ করতে মাদরাসায় ভর্তি হয়েছিল আল-আমিন (১২)। বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল খ্যাতিমান হাফেজ হয়ে আলো ছড়াবেন বিশ্বজুড়ে। ৬ পারা কুরআন মুখস্থ করাও হয়ে গিয়েছিল তার। কিন্তু হাফেজ হওয়ার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে ছেলেটি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার কালবৈশাখী ঝড়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে।

 

নিহত আল আমিন রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের ইলাশপুর গ্রামের ফল ব্যবসায়ী মো. লিটন মিয়ার ছেলে। সে রাজনগর মুহাম্মদীয় আলিয়া মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল।

 

শিক্ষক ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় সব শিক্ষার্থীদের নাস্তা দেয়া হয়। নাস্তা খেয়ে তারা পানি পান করতে সামনের টিউবওয়েলে যায়। এরই মধ্যে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে নিজেদের উড়িয়ে নেয়া কাপড় আনতে তারা লেগে পড়ে। ঝড়ের মধ্যেই সবাই চলে এলেও সবার অগোচড়ে আল আমিন বাইরে রয়ে যায়। ঝড় শেষে কক্ষ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বাইরে গিয়ে দেখেন আহত অবস্থায় মাদরাসার সামনে সে পড়ে আছে। তার হাত ভেঙ্গে গেছে। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে রাজনগর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে সিলেটের মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন ও মাদরাসার শিক্ষকরা। সেখানে রাত পৌনে ১ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। শিক্ষকরা ধারণা করছেন, ঝড়ে মাদরাসা মসজিদের মাইকের স্টিলের বাক্সের অংশ তার উপরে পড়ে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

 

নিহতের মা রাজনা বেগম বলেন, আমার ছেলেটি খুব শান্তশিষ্ট ছিল। মূলত এটাকে আল্লাহর ইচ্ছা হিসেবে মেনে নিয়েছি বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পরেন। তিনি আরো বেলন, আসলে শিক্ষকদের এখানে কিছুই করার নেই। শিক্ষকরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু করার দরকার সব আমাদের সাথে থেকে করেছেন।

 

মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষক হাফেজ আব্দুর রহমান বলেন, তাদেরকে নাস্তা দেয়ার পর সবাই পানি পান করতে বাইরে যায়। এরই মধ্যে ঝড় শুরু হলে সবাই নিজ নিজ কাপড় আনতে সামনের খোলা মাঠে যায়। ঝড়ের পর বাইরে গিয়ে দেখি আল আমিন বাইরে পড়ে আছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার দুপুরে জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে।

 

এব্যপারে রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। এখনো এ ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানায় নি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে এ ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করার থাকলে আমরা আমরা অবশ্যই করব।


আরও পড়ুন
Theme Created By ThemesDealer.Com
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।