মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক থেকে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন সুমাইয়া আক্তার(১৮)। প্রেমিক ইমরান মিয়াকে (২৫) বিয়ে করে শ্বশুড় বাড়িতে উঠেছিলেন তিনি। এদিকে পালিয়ে বিয়ে করায় পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধার বা মামলা করা হয়নি। মেয়ের সাথে যোগাযোগও রাখে নি কেউ। যে সুখের আশায় প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছেড়েছিলেন সেই প্রেমিকের নির্যাতনে এক বছর না যেতেই প্রাণ হারিয়েছে সুমাইয়ার। গত রবিবার লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় তার স্বামী। মঙ্গলবার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাপাতালে সুমাইয়ার ময়নাতদন্ত শেষে বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
নিহত সুমাইয়া আক্তার রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের মেদিনিমহল গ্রামের সেলিম আহমদের মেয়ে। স্বামীর বাড়ি কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে।
নিহত সুমাইয়ার মামা কারমান আলী বলেন, সুমাইয়া আক্তার পালিয়ে বিয়ে করেছিল কমলগঞ্জের আদমপুর ইউনিয়নের এমানি মিয়ার ছেলে ইমরান মিয়াকে। তাদের বিয়ের পর আর আমরা যোগাযোগ রাখি নি তার সাথে। যে মেয়ে পরিবারের ইজ্জতের কথা চিন্তা করেনি তার পিছু নিয়ে আর মানুষ জানিয়ে কী-বা লাভ এই ভেবে থানা-পুলিশেও যাইনি। তার সাথে যোগাযোগও ছিল না। গত রবিবার বিকালে সুমাইয়ার স্বামী ইমরান মিয়ার চাচা আমাদের বাড়ির মোবাইলে ফোন দিয়ে বলেন তোমাদের মেয়েকে দেখতে হলে ওসমানি মেডিকেলে আসো- সে অসুস্থ। কেন ও কিভাবে অসুস্থ জানতে চাইলে তিনি আমাদের হুমকি ধমকি দেন। তখন আমরা ইমরানের বাড়ির আশপাশের লোকদের কাছে খবর নিয়ে জানতে পারি সুমাইয়ার স্বামী তাকে খুব নির্যাতন করেছে। তাকে খুব বেশি মারধর করা করেছে। এরপর ওই দিনই আমরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার কোন সন্ধান পাচ্ছিলাম না। এক আত্মীয়র মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সুমাইয়ার লাশ ওসমানী হাসপাতালের হিমাগারে বেওয়ারিশ হিসেবে রয়েছে। পরে লাশ গ্রহনের জন্য তারা সিলেট কোতয়ালী থানায় যোগাযোগের পরামর্শ দেয়। থানায় যোগাযোগ করলে তারা কমলগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করে দুই দিন পর লাশ আমরা গ্রহন করেছি।
সুমাইয়ার মামা কারমান আলী আরো বলেন, পালিয়ে বিয়ে করায় আমরা যোগাযোগ করিনি। কিন্তু যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল তাদের হাতেই মেয়েটি নিহত হলো। যখন মেয়েটির মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছি আর ঘরে থাকতে পারিনি। হাসপাতালে ছুটে গিয়েছি। মঙ্গলবার বিকেলে লাশ গ্রহণ করে ওসমানিতেই ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।
এ ব্য্যপারে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, এব্যাপারে এখনো কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।