মৌলভীবাজারের রাজনগরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত আব্দুল মালিকের হত্যার দ্রুত বিচার ও একমাত্র শিশু সন্তান নিয়ে নিরাপদে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন নিহতের স্ত্রী সাবরিনা আক্তার সাফিয়া। মঙ্গলবার দুপুরে রাজনগর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ দাবী জানান।
লিখিত বক্তব্যে সাবরিনা আক্তার সাফিয়া বলেন, উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের পানিশাইল এলাকার নিজগাঁও গ্রামে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর আব্দুল মালিক খুন হন। এ ঘটনায় আব্দুর রকিব মন্টু বাদী হয়ে রাজনগর থানায় শামীম মিয়া (৩০), নূরুল ইসলাম কালা মিয়া (৫৫), খানম বেগম (৫২), আকলিমা বেগম (২১) ও অজ্ঞাত আরো ৫/৬জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা (১৯২/২০২১) করেন। মামলার পরপরই পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও মোবাইল ফোনের সূত্রধরে রাজশাহী থেকে আরো ৩জনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। আসামীরা গত আড়াই বছর জেল হাজতে ছিল। গত চার মাস আগে জামিনে বের হয়েছেন। বের হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ভাবে হুমকিধমকি দিয়ে আসছে আসামীরা। নিরাপত্তাহীনতায় সাবরিনা গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজনগর থানায় সাধারণ ডায়রিও (নং-২১৩) করেন।
সাবরিনা আক্তার আরো বলেন, তার নিহত স্বামী আব্দুল মালিক ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার নিজামপুর গ্রামের কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা এডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টুর কেয়ারটেকার ছিলেন। রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের নিজগাঁও এলাকায় সম্পত্তি রয়েছে। এ সম্পত্তি নিয়ে আব্দুর রকিব মন্টুর মামা নূরুল ইসলাম কলা মিয়ার সাথে বিরোধ রয়েছে। নূরুল ইসলাম কলা মিয়াও একসময় এ সম্পত্তির কেয়ারটেকার ছিলেন। এসব বিষয় নিয়ে তিনি আব্দুল মালিককে প্রায় সময়ই হুমকি ধমকি এবং কয়েকবার শারিরিক আঘাতও করেছেন। এতে আব্দুল মালিক বাদী হয়ে নূরুল ইসলাম কলা মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসব ঘটনায় নূরুল ইসলাম কলা মিয়া ও তার ছেলে শামীম জেল খাটেন। এসব ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা পরিকল্পিত ভাবে আব্দুর রকিব মন্টুর কেয়ারটেকার আব্দুল মালিককে নিঃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
সাবরিনা আক্তার আরো বলেন, আসামীরা জেল থেকে বের হয়ে আব্দুল মালিক হত্যার বিচার প্রক্রিয়া ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আব্দুল মালিক হত্যা মামলার বাদী আব্দুর রকিব মন্টুর রাজনৈতিক পরিচয়ের সূত্র ধরে মিথ্যা বানোয়াট গল্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। নিজগাঁও গ্রামে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী লাইসেন্স প্রাপ্ত আব্দুর রকিব মন্টুর জমিতে ‘অ্যামোনিয়া গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডার’ রাখার জানালা বিহীন সেমিপাকা ঘরকে বিভিন্ন নাম ও টর্চার সেল বলে অপপ্রচার ও গুজব রটাচ্ছে। খুনের মামলা থেকে রেহাই পেতে পরিকল্পিত ভাবে চক্রান্তের মাধ্যমে যুবলীগ নেতার টর্চার সেলসহ বিভিন্ন মুখরোচক কথার প্রচার করছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো আব্দুল মালিক হত্যার বাদী আব্দুর রকিব মন্টুকে হেনস্তা করে মামলাকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করা ও মামলাকে দূর্বল করা। আমি তাদের হুমকি ধমকি ও প্রাণে হত্যার ভয় দেখিয়ে আসছে। কিন্তু আমি এতে কোন ভাবেই পিছপা হবোনা। আমি সকলের সহযোগিত চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে ছিলেন নিহত আব্দুল মালিকের শিশু কন্যা আফসারা আঞ্জুম, সাবরিনা আক্তার সাফিয়ার পিতা কমরু মিয়া, নানু মিয়া, রফিক মিয়া, আব্দুল মালিকে বৃদ্ধা মা সালেহা বেগম ছায়া, ভাই আব্দুল হাকিম ও খছরু চৌধুরী প্রমুখ।
মামলার আসামী আজিজুর রহমান প্রান্ত বলেন, আমরা কখনোই তাদের হুমকি দেইনি। এটা তারা থানায় প্রমাণ করতে পারেনি। এছাড়ও আব্দুর রকিব মন্টুর যে ঘর রয়েছে তা দেখে কেউই বলবে না এটা ব্যাবসার ঘর। এমন জায়গায় বানানো যে এখানে লোডিং আনলোডিংও করার সুযোগ নেই। এলাকার লোকজন দেখেছে রাতের আঁধারে এখানে কালো কালো গাড়ি আসতো আইনশ্ঙৃখলা বাহিনীর লোকজনও আসতেন বলে দেখা গেছে।