মৌলভীবাজারের রাজনগরে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সেলুনের উপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এতে চাঁদাবাজি ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ এনে ১৩ জনের নাম উল্ল্যেখ ও ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজনগর থানায় মামলাটি করেন উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মশাহিদ আহমদ। এঘটনায় উভয় পক্ষ সভা-সমাবেশ, শোডাউন করেছে। যেকোনো সময় সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজনগর সদর ইউনিয়নের দত্তগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মনসুরনগর ইউনিয়নে বিএনপির সভায় যাওয়ার সময় কলেজ পয়েন্টে পৌঁছালে উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ছাত্রদল নেতা মাহবুব আলম জামালসহ কয়েকজন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম সেলুনের গাড়ি আটকিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সেলুনকে লক্ষ্য করে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ছাত্রদল নেতা জামাল গুলি করেন বলে অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়। এসময় লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নুরুল ইসলাম সেলুনের টয়োটা প্রাডো গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষ সভা-সমাবেশ ও শোডাউন করেছে। যেকোনো সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে।
ছাত্রদল নেতা মাহবুব আলম জামাল বলেন, মামলায় আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও গুলি করাসহ যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা। আমাদের দাবি ছিল, কলেজ পয়েন্টে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের লক্ষ্যে সভা হোক। কিন্তু নুরুল ইসলাম সেলুনসহ কয়েকজন নিজেদের সেচ্ছাচারিতা ও সুবিধার্থে দত্তগ্রাম স্কুলে সভা করেছেন। ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের না জানিয়ে তারা কমিটি করছেন। ওইদিন কলেজ পয়েন্টে আমাদের একটি পথসভা ছিল। নুরুল ইসলাম সেলুন গাড়ি থেকে নেমে উপস্থিত নেতাকর্মীদের অকথ্য গালিগালাজ ও গুলি ছুড়েছেন। জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যস্ততায় এ ঘটনার সালিশ মিমাংসা হওয়ার কথা ছিল। আমরাও মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সেলুন বলেন, উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে সকল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি করতে নির্দেশ দেয়া হয়। সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা করে কমিটির গঠনের কাজ করা হচ্ছে। দত্তগ্রামে মিটিং শেষে মনসুরনগরে যাওয়ার জন্য কলেজ পয়েন্টে পৌঁছালে জামালসহ ৪০-৫০ জন আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমার উপর গুলি করে ও গাড়ি ভাংচুর করে। উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাদের বাধা দিতে গেলে মারধরের শিকার হয়। আমার গাড়ি ও নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল তারা ভাংচুর করেছে। গাড়িতে হামলা করেছে। মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে জামাল বলেছে আমি তাদের গুলি করেছি। অথচ আমি সেদিন গাড়ি থেকেই নামি নাই। দীর্ঘদিন ধরে লোকমারফত আমার কাছে চাঁদার জন্য খবর পাঠিয়েছে। আমি কোনোভাবেই তাদেরকে চাঁদা দিবো না বলেছি।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুর্শেদুল হাসান খান বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।