Logo
সর্বশেষ :
রাজনগরে ব্যবসায়ীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন গণ-অভ্যুত্থান দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাজনগরে বিএনপি’র বিজয় মিছিল প্রেস রিলিজ : অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন নেছার আহমদ সানি মৌলভীবাজারে কৃষকদলের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল রাজনগরে জনসংখ্যা দিবস উদযাপন রাজনগরে মিষ্টির কারখানায় ঢুকতে না দেয়ায় যুবদল নেতার হামলা, আহত ২ ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড মিসবাহ ভেবে হত্যা করা হয় ‘আইনজীবী সুজনকে’ রাজনগরে ছাত্রদলের আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল রাজনগরে দারুল ক্বিরাত এবং বয়স্কদের সহীহ্ কুরআন প্রশিক্ষণের সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরন মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ কর্মচারীদের মধ্যে শিবিরের ঈদ সামগ্রী বিতরণ

ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে টাকা আদায়

সারাবাংলা ডেস্ক : / ২৩৫
প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২

ফেসবুকে উচ্চবিত্ত ও ধনীদের আইডি টার্গেট করে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠাতেন। এরপর পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। মন দেওয়া-নেওয়া। প্রেমের একপর্যায়ে প্রেমিকের আবদার একান্তে সময় কাটানোর। ঠিকানা প্রেমিকার বাসা। আর সেই বাসায় গিয়েই ঘটে যত বিপত্তি। প্রেমিকারূপে থাকা ওই নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে জিম্মি করে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সব শেষে মানসম্মান রক্ষায় তাদের চাহিদা পূরণ করেই মুক্তি মেলে প্রতারণার শিকার প্রেমিকদের।

এভাবেই দুই নারী সম্পর্কের ভিত্তিতে গত দুই বছরে বাসায় ডেকে এনে প্রায় ৫০ জন ধনাঢ্য ও করপোরেট ব্যক্তির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। চক্রের হাতে প্রতারণার শিকার এমন এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও দক্ষিণখানে অভিযান চালিয়ে দুই নারীসহ চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আল মাহমুদ ওরফে মামুন, মো. আকরাম হোসেন ওরফে আকিব, মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া, তানিয়া আক্তার, মো. রুবেল, মো. মহসীন ও মো. ইমরান। অভিযানে তাঁদের কাছ থেকে অশ্লীল ছবি ও গোপন ভিডিও ধারণকাজে ব্যবহৃত ১৪টি মোবাইল ফোন ও দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে ব্ল্যাকমেইলিং ও পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে চাঁদাবাজির অভিযোগে চক্রের মূল হোতা ও দুই নারীসহ সাতজনকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা এবং দক্ষিণখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্প্রতি এক ভুক্তভোগী র‍্যাব-১-এ অভিযোগ করেন—গত ২২ জুলাই ভুক্তভোগীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে মাস্তুরা আক্তার প্রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ হয়। গত ১০ আগস্ট ভুক্তভোগীকে মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া কৌশলে রাজধানীর একটি অভিজাত আবাসিক এলাকায় তাঁর বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যান। রুমের ভেতরে প্রবেশ করার পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রিয়া ও তাঁর সহযোগীরা ভুক্তভোগীকে বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন।

পরে এসব ভিডিও দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা এবং ব্যাংক চেকের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা আদায় করে এই চক্র। লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগী ওই সময়ের ঘটনাটি একটি স্পর্শকাতর ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভেবে কোথাও কোনো অভিযোগ না করে নীরব থাকেন। কিন্তু এ ঘটনার এক সপ্তাহ পরে আবারও আল মাহমুদ ওরফে মামুন ভুক্তভোগীর কাছে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি করা ২ লাখ টাকা না দিলে ধারণকৃত ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান।

এ সময় ভুক্তভোগী নিরুপায় হয়ে র‍্যাব-১-এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করে আইনগত সহায়তা চান। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র‍্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাটারার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও দক্ষিণখানে অভিযান চালিয়ে র‍্যাব পর্নোগ্রাফি ও চাঁদাবাজ চক্রের মূল হোতাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।

আব্দুল্লাহ আল মোমেন আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অভিনব প্রতারণা চক্রের সদস্য। এই চক্রের মূল হোতা আল মাহমুদ ওরফে মামুন এবং তাঁর নারী সহযোগী তানিয়া আক্তার ও মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া। এ দুই নারী সদস্যের ছবি ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে নির্দিষ্ট কোনো আবাসিক ফ্ল্যাট বা হোটেলে আমন্ত্রণ জানানো হতো। ভুক্তভোগীরা ওই স্থানে গেলেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে অন্য সদস্যরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে অর্থ আদায় করত। এ কৌশল অবলম্বন করে চক্রটি গত দুই বছরে প্রায় ৫০ জনের বেশি ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ ব্যয় করে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করে আসছিলেন।

গ্রেপ্তার দুই নারী সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার আল মাহমুদ ওরফে মামুনের স্ত্রী তানিয়া আক্তার। তাঁরা দুজনে পরিকল্পিতভাবে এ কাজে জড়িত। এ ছাড়া গ্রেপ্তার মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

এ সময় ফেসবুকে বন্ধুত্বের ডাকে সাড়া দিয়ে অপরিচিত কিংবা নির্জন স্থানে না যাওয়ার পরামর্শ দেন র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।


আরও পড়ুন
Theme Created By ThemesDealer.Com
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।
© অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। কপি না করে নিজে লিখুন।