মৌলভীবাজারের রাজনগরে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে কমিউনিটি ক্লিনিকের হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডারের সাথে (সিএইচসিপি) অশালীন, অসামাজিক আচরণ ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও রাজনগর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমীন খান মামুন ওই কমিউনিটি ক্লিনিকের সিজি গ্রুপের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তবে ওই ইউপি সদস্য হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও সিএইচসিপি থেকে জানা যায়, উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সোনাটিকি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোছা. হেলন বেগম গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কমিউনিটি ক্লিনিকে থাকাকালীন সময়ে ইউপি সদস্য নুরুল আমীন খান মামুন সেবা নিতে সেখানে যান। এসময় তিনি স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও এমএইচভি’র উপস্থিতিতে সিএইচসিপি মোছা. হেলন বেগমকে গালিগালাজ করেন। গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে ওই ইউপি সদস্য শারিরিকভাবে আঘাত করতে তার দিকে তেড়ে আসেন। এসময় তিনি ক্লিনিকে এলে প্রাণেহত্যার হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়। এদিকে হেলন বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আফজালুর রহমান স্বাক্ষরিত উঃস্বাঃকমঃ/রাজঃ/২০২২/২৮০৯ স্মারকে ২৯ সেপ্টেম্বর রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে সুপারিশসহ পত্র পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নুরুল আমীন খান মামুন বলেন, হেলন বেগমের বিরুদ্ধে আর্থিক ও সেবাপ্রাপ্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জনগণের অভিযোগ ছিল। বিষয়টি আগেও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবগত করে এলাকার মানুষ যাতে সেবা পায় সেজন্য তার বদলে অন্য কাউকে এখানে দিতে অনুরোধ করেছিলাম। বুধবার সেবা নিয়ে আসার সময় তার সাথে আলাপের একপর্যায়ে ‘ইউএইচএফপিও মহোদয়ের সাথে সেবাগ্রহীতার সুবিধার্থে নতুন কাউকে এখানে দেওয়ার আলোচনা হয়েছে’ জানালে তিনি ক্ষ্রিপ্ত হয়ে বলেন, আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার কে?। এসময় তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেয়া আমার কাজ নয়।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, এঘটনার একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে আমার একজন অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আফজালুর রহমান বলেন, ইউপি সদস্য ও ক্লিনিকের সিএইচসিপি’র মধ্যে আগে কিছু নিয়ে মনোমালিন্য ছিল। কিন্তু সিএইচসিপি’র বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারতেন। তা না করে তিনি গালিগালাজ ও হুমকি-ধামকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। এঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।